বগালেক
বান্দরবার জেলা রুমা উপজেলা অন্তগর্ত বগালেকের কথা কে না জানে? আপনি যদি বান্দরবান জেলা ঘরতে যান তাহলে বগালেক না গেলে মনে হবে এবার ঘুরানো তাই বৃথা মনে করবেন। এলেক টি বান্দরবান জেলা রুমা উপজলা অবস্থিত। এই লেকটি তিনদিকে থেকে পর্বতশৃঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত। এই পর্বতশৃঙ্গগুলো আবার প্রায় ৪৬ মিটার উচুঁ বাঁশঝাড়ে আবৃত। এটি সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৪৫৭ মিটার ৬১০ মিটার উচ্চতার মধ্যমর্বীতে এই লেকটি অবস্থান। এর পানি গভীরতা প্রায় ৩৮ মিটার। এর আশেপাশে আর কোন পানির উস নেই।
বগালেক |
ইতিহাস
এই লেকটি স্থানীয় আদিবাসীদের কাছে বগাকাইন নামে পরিচিত। অনেকদিন আগের কথা! এই বগাকাইন বা লেক ছিল আদিবাসী বমদের পাড়া মেইন কেন্দ্র বিন্দুর স্থান। এটি একটি সুউচ্ছ পাহাড় ছিল। একটি হঠাত করে একটি বাড়ির নিচে একটা গর্তের দেখা দিল। সে গর্তের ধারে কোন মুরগি , শুকর বা ছাগল গেলে নিমিষেই শেষ হয়ে যায় বা খেয়ে ফেলে। তবুও গ্রামবাসীরা তাদের কাজের চাপের কারণে খেয়াল করে নি। একটি একটি পালিত ছাগল সে গর্তের কাছে গেলে গর্ত থেকে বিশাল এক সাপের মত যা স্থানীয়দের ধারণা মতে (দেবতার ড্রাগন) নামে পরিচিত ছাগলটিকে খেয়ে ফেলল। সে দৃশ্যটি তার উপরে থাকা বাড়ির মালিক স্পষ্ট দেখতে পেয়েছে। সন্ধ্যায় হলে গ্রামের লোকেরা যখন সবার নিজ নিজ কাজ শেরে গ্রামের আসল, তখন সে মহিলা ঘটনাটি সব খুলে বলল। তারপর পরদিন সকালে গ্রাম বাসীরা কেউ আর কাজে না গিয়ে সেটা দেখার জন্য থাকল তখন পরীক্ষা স্বরুপ একটি
ঐতিহাসিক বগালেক |
ছোট মুরগির বাচ্চা গর্তের সামনে রেখে দিল কিছুক্ষণ পর বিকত শব্দ করে মুরগি বাচ্চাটিকে খেয়ে খেলল। তখন গ্রাম বাসিরা ঠিক করল সে ড্রাগন কে যে কোন প্রকারে হোক ধরা লাগবে। আবার সে ড্রাগনকে ধরতে হলে তো খালি হাতে ধরা যাবেনা। তাই একটি বড় ধরনের বর্শি (মাছ ধরার যন্ত্র) কামানের কাছে অর্ডার দিয়ে বানাতে হবে। আবার বানানোর জন্যতো টাকা লাগবে তাই গ্রামে সব পরিবার থেকে টাকা উত্তোলনেরকরল। কিন্তু সে গ্রামে এক বৃড়িমা তার ছোট নাতনীকে নিয়ে থাকছিল। তার কাছ থেকেও টাকার তোলার জন্য গেলে বুড়িমাটি বলল আমি কোন কাজকর্ম করতে পারিনা টাকা কোথায় থেকে পাবো? তখন তার কাছ থেকে আর টাকা নেয়ার হলোনা। পরদিন সকালে সে সাপ (ড্রাগন) টিকে ধরার জন্য আর কেউ কাজে না গিয়ে সবাল থেকে গ্রামের ছোটবড় সবাই অধির আগ্রহে বসে আছে। গ্রাম বাসীরা তখন একটি ছোট ছাগলের বাচ্চাকে সে বানানো বর্শির দিলে আটকিয়ে সে গর্তের সামনে রাখল। কিছুক্ষণ পর আবার বিকত শব্দ করে সে ছাগলটিকে যখন গিলে ফেললো তখন সে বর্শি সাপ(ড্রাগনের) মুখে আটকে গেল। তখন গ্রামবাসীরা সবাই দড়ি দিযে টানতে টানতে তিনভাগ এক ভাগ
ঐতিহাসিক বগালেক |
টেনে বের করতে পারল। আর যখন টেনে বের করতে পারল না তখন যতটুকু বের করতে পেরেছে ততটুকু কেটে দিল। তারপর গ্রামবাসী সবাই /যারা টাকার তোল সময় দিতে পারছে বা গর্ত থেকে টানা কাজে আসতে পারছে তাদের মধ্যে সে ড্রাগনের মাংশ ভাগ করে দিয়ে খেয়ে খেলল। তখন সে বুড়ি মা নোট ছোট্ট নাতনী তো কোন কাজে আসতে পারে নাই তাই তাদেরকে কোন মাংশ বা ওই কাজে অংশগ্রহণ করাই না। সে দিন রাতের গ্রামবাসীরা মাংশ খেলে যে আনন্দ মূর্তি করল আর ছোট ছোট বাচ্চা মায়েরা নাচতে নাচতে তার কোল থেকে কখন যে, তার বাচ্চা পরে গেল সেই খেয়া ছিল না। গ্রামবাসীরা যখন আনন্দ ফুর্তি করে সবাই যখন ঘুমিয়ে পরছে , সে দিন প্রায় ভোর দিকে সেই বুড়ি মাকে ড্রাগন স্বপ্নের মধ্যে দেখালো সে গ্রামটিকে তলিয়ে ফেলবে। বুড়ি মাটি স্বপ্ন ভাঙ্গার সাথে সাথ উঠে দেখি সত্যি সত্যি এই বিশাল সুউচ্চ পাহাড়টি নিমিষের মধ্যে সাগরের পরিনত হয়ে গেল। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি গ্রাম আর গ্রাম নেই হয়ে গেছে বিশাল এক দিঘির। এখনো সে বুড়ি মা ও নাতনীর বংশধরেরা সে লেকের পাশে বসবাস করে আছে। বগা লেকের পানি হঠাৎ করে ঘোলা হয়ে যাওয়ার কারণ এখনও অজানা। গত এক সপ্তাহ ধরে এই লেকের পানি ঘোলা হয়ে আছে।
উচ্চতার
রুমা উপজেলার পূর্ব দিকে
পৃষ্ঠতলীয় উচ্চতা: ২,৪০০ ফুট
গড় গভীরতা: ৩৮ মিটার (১২৫ ফুট)
সমুদ্রপৃষ্ঠ প্রায় থেকে প্রায় ৩০০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত বগা লেকের আয়তন প্রায় ১৫ একর।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে সাতকানিয়া, কেরানীহাট হয়ে বান্দরবানের যাবেন প্রথমে। তারপর বাস টার্মিনালে নাম অনেক গুলো চাদেঁ গাড়ী আপনার চোখে পরবে। সেখান থেকে যেকোন একটা গাড়ী ভাড়া করে আপনি সহজেই ঘুরে আসতে পারবেন কাঙি